قُلْ أَؤُنَبِّئُكُمْ بِخَيْرٍ مِنْ ذَلِكُمْ لِلَّذِينَ اتَّقَوْا عِنْدَ رَبِّهِمْ جَنَّاتٌ تَجْرِي مِنْ تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا وَأَزْوَاجٌ مُطَهَّرَةٌ وَرِضْوَانٌ مِنَ اللَّهِ وَاللَّهُ بَصِيرٌ بِالْعِبَادِ (15) الَّذِينَ يَقُولُونَ رَبَّنَا إِنَّنَا آمَنَّا فَاغْفِرْ لَنَا ذُنُوبَنَا وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ (16) الصَّابِرِينَ وَالصَّادِقِينَ وَالْقَانِتِينَ وَالْمُنْفِقِينَ وَالْمُسْتَغْفِرِينَ بِالْأَسْحَارِ (17) [سورة آل عمران: 15-17]
আলোচ্য বিষয়: জান্নাত, যা দুনিয়া ও তার সৌন্দর্যের চেয়ে উত্তম।
আয়াতাবলীর সরল অনুবাদ:
১৫। হে নবী! আপনি বলুন, আমি কি তোমাদেরকে সংবাদ দেব এর চেয়ে উত্তম বস্তুর? মোত্তাকীদের জন্য রয়েছে তাদের রবের কাছে এমন জান্নাত, যার নিচে প্রবাহমান আছে নদীসমূহ, সেখানে তারা চিরস্থায়ী হবে, এবং পবিত্র স্ত্রীগণ ও আল্লাহর সন্তুষ্টি রয়েছে; আর আল্লাহ সম্যক দ্রষ্টা বান্দাদের সম্পর্কে।
১৬। যারা বলে, হে আমাদের রব! নিশ্চয় আমরা ঈমান এনেছি; অতএব আমাদেরকে ক্ষমা করুন আমাদের পাপসমূহ, এবং আমাদেরকে রক্ষা করুন জাহান্নামের আযাব থেকে।
১৭। যারা ধৈর্যশীল, যারা সত্যবাদী, যারা অনুগত, যারা দানশীল এবং রাতের শেষাংশে ক্ষমাপ্রার্থী।
আয়াতাবলীর ভাবার্থ:
আল্লাহ তায়ালা রাসূলুল্লাহ (সা.) কে চৌদ্দ নাম্বার আয়াতে উল্লেখিত ছয়টি লোভনীয় বস্তুর চেয়ে উত্তম বস্তুর সংবাদ মানবজাতিকে প্রদানের জন্য নির্দেশ দিয়ে বলেন: হে আল্লাহর নবী! আপনি তাদেরকে বলুন: আমি তোমাদেরকে লোভনীয় ছয়টি বস্তুর চেয়ে উত্তম কোন বস্তুর সংবাদ দিবো কি? তাহলে জেনে রাখো, যারা দুনিয়াতে তাক্বওয়া ভিত্তিক জীবনযাপন করে, তাদের জন্য আখেরাতে স্থায়ী ভোগবিলাসের জন্য তিনটি মহামূল্যবান বস্তু অবধারিত:
(ক) এমন আকর্ষণীয় মহামূল্যবান জান্নাত, যার তলদেশ দিয়ে বিভিন্ন প্রজাতির নদীসমূহ প্রবাহমান রয়েছে।
(খ) হায়েজ-নেফাস থেকে পুতপবিত্র চিরকুমারী রমনী।
(গ) আল্লাহর সন্তুষ্টি।
সুতরাং সতর্ক হয়ে যাও, নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা তাঁর বান্দাদের সম্পর্কে সম্যক দ্রষ্টা।
নিম্ন বর্ণিত গুণে গুণান্বিত মোত্তাকিগণ উল্লেখিত পুরস্কার ভোগ করবে:
(ক) যারা অন্তর দিয়ে ঈমান গ্রহণ করে এবং মুখে জোড়ালোভাবে তার স্বীকৃতি প্রদান করে।
(খ) কৃতগুণাহের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায়।
(গ) জাহান্নাম থেকে মুক্তির জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করে।
(ঘ) বিপদেআপদে, সৎআমল করতে, হক্বের উপর অটুট থাকতে এবং দ্বীন প্রচারের কাজে ধৈর্যধারণ করে।
(ঙ) বিশ্বাস, কথা ও কাজে সত্যবাদী হয়।
(চ) বিনয়ের সাথে আল্লাহ ও তার রাসূলের (সা.) অনুসরণ করে।
(ছ) সাধ্যমতো গোপনে ও প্রকাশ্যে আল্লাহর পথে দান করে।
(জ) শেষরাতে তাহাজ্জুদ সালাতে আল্লাহর কাছে ইস্তেগফার করে। (আইসার আল-তাফসীর: ১/২৯৫, আল-তাফসীর আল-মুয়াস্সার: ১/৫১-৫২, আল-মোন্তাখাব: ১/৮৫-৮৬) ।
আয়াতাবলীর অস্পষ্ট শব্দের ব্যাখ্যা:
(ذَلِكُمْ) “ঐগুলো”, ইঙ্গিতসূচক সর্বনাম। এর দ্বারা চৌদ্দ নাম্বার আয়াতে উল্লেখিত ছয়টি লোভনীয় বস্তুর প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে।
(أَزْوَاجٌ مُطَهَّرَةٌ) “পুতপবিত্র স্ত্রী”, জান্নাতের হুর কে বুঝানো হয়েছে, যা হায়েজ-নেফাসের রক্ত সহ সকল ধরণের কদর্য ও অপরিচ্ছন্নতা থেকে পুতপবিত্র। (তাফসীর গরীব আল-কোরআন, কাওয়ারী: ৩/১৫) ।
(الْأَسْحَارِ) “রাতের শেষাংশ”, সুবহে সাদিকের খুব কাছাকাছি সময়, রাতের একেবারে শেষাংশ, যে সময়ে রাতের আধার দিনের আলোর সাথে মিশে যায়। (তাফসীর আল-মুনীর, ওয়াহাবা জুহাইলী: ৩/১৭১)।
আয়াতাবলীর সাথে পূর্বের আয়াতের সম্পর্ক:
পূর্বের আয়াত তথা চৌদ্দ নাম্বার আয়াতের শেষাংশে বলা হয়েছে, “আল্লাহর কাছে উত্তম আশ্রয়স্থল বা ভোগসামগ্রী রয়েছে”। আর অত্র আয়াতসমূহ তথা (১৫-১৭) নাম্বার আয়াতে উক্ত আয়াতাংশের ব্যাখ্যা প্রদান করে বলা হয়েছে: আল্লাহর কাছে বিরাজমান উত্তম ভোগসামগ্রী হলো: জান্নাত, পুতপবিত্র রমনী এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি, যা আটটি গুণে গুণান্বিত মোত্তাক্বীদের জন্য অবধারিত। (তাফসীর আল-মুনীর, ওয়াহাবা জুহাইলী: ৩/১৭১) ।
আয়াতাবলীর শিক্ষা:
১। পনের নাম্বার আয়াতে আল্লাহ তায়ালা পৃথিবীর লোভনীয় ছয়টি বস্তুর চেয়ে উত্তম এবং স্থায়ী তিনটি ভোগসামগ্রীর কথা বর্ণনা করেছেন। তিনটি বস্তুর সমন্বয়ে এমন একটি প্যাকেজ, যার মাধ্যমে একজন জান্নাতী আত্মিক এবং দৈহিক দুই ধরণের প্রশান্তি অনুভব করবেন। যেমন: তিনটি বস্তুর প্রথমটি হলো: জান্নাত, যা বিলাসবহুল থাকার জায়গা, দ্বিতীয় নাম্বার হলো: পুতপবিত্র রমনী, যা নয়নাভিরাম জান্নাতে ভোগবিলাসের জন্য রাখা হয়েছে। এ দুইটির মাধ্যমে একজন জান্নাতী সেখানে দৈহিক শান্তি অনুভব করবে। আর তৃতীয় নাম্বার হলো: আল্লাহর সন্তুষ্টি, এর মাধ্যমে একজন জান্নাতী আত্মিক প্রশান্তি অনুভব করবে। (তাফসীর আল-মুনীর, ওয়াহাবা জুহাইলী: ৩/১৭২) ।
২। পনের নাম্বার আয়াতের শেষাংশে বলা হয়েছে: আল্লাহ তায়ালা তাঁর বান্দাদের অন্তর্নিহিত গোপন বিষয়, তাদের বাহ্যিক কৃতকর্ম এবং তাদের তাক্বওয়া সম্পর্কে স্ববিস্তারিক জ্ঞান রাখেন।
কোন কোন তাফসীরকারক অত্র আয়াতাংশের ব্যাখ্যায় বলেছেন: আল্লাহ তায়ালা তাদের তাক্বওয়া সম্পর্কে স্ববিস্তারিক জ্ঞান রাখেন। এ তথ্যের আলোকেই মহান ন্যায়পরায়ণ আল্লাহ তায়ালা হাশরের ময়দানে মানবজাতির বিচার করবেন। (তাফসীর আল-মুনীর, ওয়াহাবা জুহাইলী: ৩/১৭৩)। কেউ তার কোন অপকর্মকে অস্বীকার করলে তার নিজস্ব অঙ্গ-প্রতঙ্গকে সাক্ষী হিসেবে দাড় করানো হবে। এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন:
﴿الْيَوْمَ نَخْتِمُ عَلَى أَفْوَاهِهِمْ وَتُكَلِّمُنَا أَيْدِيهِمْ وَتَشْهَدُ أَرْجُلُهُمْ بِمَا كَانُوا يَكْسِبُونَ﴾ [سورة يس: ৬৫].
অর্থাৎ: “আজ আমি তাদের মুখের উপর মোহর মেরে দিবো; তাদের হাতগুলো আমার সাথে কথা বলবে, তাদের পাগুলো তাদের কৃত অপকর্মের সাক্ষ্য দিবে” (সূরা ইয়াসিন: ৬৫) । সূরা নূর এর ২৪ নাম্বার আয়াতেও অনুরুপ বর্ণনা এসেছে।
৩। পনের নাম্বার আয়াত থেকে বুঝা যায় আল্লাহর কাছে বিরাজমান স্থায়ী ভোগসামগ্রী কেবল মোত্তাক্বীগণ ভোগ করতে পারবেন। এ জন্যই ইসলামের সকল আয়োজন, যেমন: সালাত, সওম, হজ্জ ইত্যাদি একজন মুমিনকে মোত্তাক্বী বানানোর জন্য।
এখন প্রশ্ন হতে পারে, আল্লাহ তায়ালা তাঁর কাছে বিদ্যমান স্থায়ী ভোগসামগ্রী লাভের জন্য মুমিন অথবা মুসলিমকে বাদ দিয়ে মোত্তাক্বীকে খাস করলেন কেন?
এ প্রশ্নের উত্তর হলো: একজন মুমিনের চারটি স্তর আছে:
(ক) ঈমান বা মুমিনের স্তর, যারা শুধু ঈমানের ৬টি রুকনকে আন্তরিকভাবে বিশ্বাস করে। এদের সংখ্যা খুব কম।
(খ) ইসলাম বা মুসলিমের স্তর, যারা ঈমানের ঘোষণা প্রদানের পাশাপাশি সালাত, সাওম, যাকাত এবং হজ্জ পালন করে। এদের সংখ্যা খুব বেশী। এ দুই স্তরের মানুষ প্রথম ধাপে জান্নাত পাবে না, এ জন্য স্থায়ী ভোগসামগ্রী লাভের ক্ষেত্রে তাদেরকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
(গ) তাক্বওয়া বা মোত্তাক্বীর স্তর, যারা ঈমান এবং ইসলামের চর্চা করতে করতে এমন পর্যায় পৌঁছে গেছে যে অপরাধে জড়াতে চাইলেও আল্লাহর ভয়ের কারণে জড়াতে পারে না, অথবা ভুলক্রমে জড়িয়ে পড়লেও সাথে সাথে অনুশোচনা করে তাওবা-ইস্তেগফার করে। এদের সংখ্যা কম। এ স্তরের মানুষ হিসাবনিকাসের পর প্রথম ধাপেই জান্নাতে প্রবেশ করবে।
(ঘ) ইহসান বা মুহসিনের স্তর, যারা ঈমান, ইসলাম ও তাক্বওয়ার চর্চা করতে করতে এমন পর্যায় পৌঁছে গেছে যে তারা কোন অপরাধে জড়ানোর কথা ভাবতেই পারে না। সাহাবীদের বিশাল অংশ এ স্তরের অন্তভর্ভূক্ত ছিলেন। বর্তমানে এদের সংখ্যা খুবই কম। এ স্তরের মানুষ সহজ হিসাবনিকাসের পর প্রথম ধাপেই জান্নাতে প্রবেশ করবে, যা সূরা ইনশেক্বাক্ব এর আট নাম্বার আয়াতে বলা হয়েছে।
মুমিনের চারটি স্তর সম্পর্কে একটি আয়াতে এসেছে:
﴿لَيْسَ عَلَى الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ جُنَاحٌ فِيمَا طَعِمُوا إِذَا مَا اتَّقَوْا وَآمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ ثُمَّ اتَّقَوْا وَآمَنُوا ثُمَّ اتَّقَوْا وَأَحْسَنُوا وَاللَّهُ يُحِبُّ الْمُحْسِنِينَ﴾ [سورة المائدة: ৯৩].
অর্থাৎ: “যারা ঈমান এনেছে এবং নেকআমল করেছে, নিষেধাজ্ঞার পূর্বে তারা যা খেয়েছে তার জন্য তাদের গুনাহ হবে না। তবে শর্ত হলো: ভবিষ্যতে যদি তারা ঈমান, নেকআমল ও তাক্বওয়ার সাথে জীবনযাপন করে। অতঃপর তারা ঈমান আনে এবং তাক্বওয়া অবলম্বন করে; অতঃপর তারা তাক্বওয়া অবলম্বন করে এবং ইহসান করে। আর আল্লাহ মুহসিনদেরকে ভালোবাসেন” (সূরা মায়িদাহ: ৯৩) ।
এ সম্পর্কে আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
“إِنَّ اللَّهَ قَالَ مَنْ عَادَى لِى وَلِيًّا فَقَدْ آذَنْتُهُ بِالْحَرْبِ ، وَمَا تَقَرَّبَ إِلَىَّ عَبْدِى بِشَىْءٍ أَحَبَّ إِلَىَّ مِمَّا افْتَرَضْتُ عَلَيْهِ ، وَمَا يَزَالُ عَبْدِى يَتَقَرَّبُ إِلَىَّ بِالنَّوَافِلِ حَتَّى أُحِبَّهُ ، فَإِذَا أَحْبَبْتُهُ كُنْتُ سَمْعَهُ الَّذِى يَسْمَعُ بِهِ ، وَبَصَرَهُ الَّذِى يُبْصِرُ بِهِ ، وَيَدَهُ الَّتِى يَبْطُشُ بِهَا وَرِجْلَهُ الَّتِى يَمْشِى بِهَا ، وَإِنْ سَأَلَنِى لأُعْطِيَنَّهُ ، وَلَئِنِ اسْتَعَاذَنِى لأُعِيذَنَّهُ ، وَمَا تَرَدَّدْتُ عَنْ شَىْءٍ أَنَا فَاعِلُهُ تَرَدُّدِى عَنْ نَفْسِ الْمُؤْمِنِ ، يَكْرَهُ الْمَوْتَ وَأَنَا أَكْرَهُ مَسَاءَتَهُ” (صحيح البخاري: ৬০৫২).
অর্থাৎ: “আল্লাহ বলেন, যে ব্যক্তি আমার কোন বন্ধুর সাথে দুশমনি করবে, আমি সার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করব। আমি যা কিছু আমার বান্দার উপর ফরয করেছি, কেবল তা দ্বারা কেউ আমার নৈকট্য লাভ করতে পারে না। আমার বান্দা সর্বদা নফল ইবাদত দ্বারা আমার নৈকট্য লাভ করে। এমন কি অবশেষে আমি তাকে আমার এমন প্রিয় পাত্র বানিয়ে নেই যে, আমিই তার কান হয়ে যাই, যা দিয়ে সে শুনে। আমিই তার চোখ হয়ে যাই, যা দিয়ে সে দেখে। আর আমিই তার হাত হয়ে যাই যা দিয়ে সে ধরে। আমিই তার পা হয়ে যাই, যা দিয়ে সে চলে। সে যদি আমার কাছে কিছু চায়, তবে নিশ্চয়ই তাকে তা দান করি। আর যদি সে আমার কাছে আশ্রয় প্রার্থণা করে, তবে অবশ্যই আমি তাকে আশ্রয় দেই। আমি কোন কাজ করতে চাইলে তা করতে দ্বিধা করি না, যতটা দ্বিধা করি মুমিন বান্দার প্রাণ নিতে। সে মৃত্যুকে অপছন্দ করে আর আমি তার বেঁচে থাকাকে অপছন্দ করি” (সহীহ আল-বুখারী: ৬০৫২) ।
একজন মুমিন মোত্তাক্বী কিনা তা সে নিজেই পরীক্ষা করতে পারেন। পরীক্ষা করার সহজ উপায় হলো: যে কোন ধরণের খারাপ কাজে লিপ্ত হতে গেলেই আল্লাহর উপস্থিতির কথা স্মরণ করে তা থেকে বিরত থাকা। এ লক্ষণ যার ভিতর পরিলক্ষিত হবে সে আল্লাহর কাছে মোত্তাক্বী হিসেবে গণ্য হবে। এ অবস্থার উপর দীর্ঘ দিন অতিবাহিত হলে একপর্যায়ে সে মুহসিনের স্তরে উন্নিত হবে, ইনশাআল্লাহ।
৪। পনের নাম্বার আয়াত থেকে বুঝা যায় কে কতটুকু তাক্বওয়ার অধিকারী তা একমাত্র আল্লাহ তায়ালা জানেন। এজন্য মানুষ যাকে তার বাহ্যিক বেসবুসা দেখে মোত্তাক্বী বা বুযূর্গ ধারণা করে, আল্লাহর কাছে সে মোত্তাক্বী নাও হতে পারে। কোরআন-সুন্নাহের অনেক জায়গায় দেখতে পাই দুনিয়ায় মোত্তাক্বী হিসেবে খ্যাত কিছু মানুষকে জাহান্নামে দেখতে পেয়ে তার ভক্তবৃন্দ রীতিমতো হতভাগ হবে। সুতরাং আমাদের উচিৎ মানুষকে পরোয়া না করে আল্লাহর দফতরে মোত্তাক্বী হিসেবে নাম লেখানোর জন্য চেষ্টা করা। (আল্লাহই ভালো জানেন) ।
৫।ষোল এবং সতের নাম্বার আয়াতে আল্লাহ তায়ালা যে সকল মোত্তাক্বীগণ আখেরাতের স্থায়ী ভোগসামগ্রী লাভে ধন্য হবেন তাদের আটটি গুণ বর্ণনা করেছেন:
(ক) যারা অন্তর দিয়ে ঈমান গ্রহণ করে এবং মুখে জোড়ালোভাবে তার স্বীকৃতি প্রদান করে।
(খ) কৃতগুণাহের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায়।
(গ) জাহান্নাম থেকে মুক্তির জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করে।
(ঘ) বিপদেআপদে, সৎআমল করতে, হক্বের উপর অটুট থাকতে এবং দ্বীন প্রচারের কাজে ধৈর্যধারণ করে।
(ঙ) বিশ্বাস, কথা ও কাজে সত্যবাদী হয়।
(চ) বিনয়ের সাথে আল্লাহ ও তার রাসূলের (সা.) অনুসরণ করে।
(ছ) সাধ্যমতো গোপনে ও প্রকাশ্যে আল্লাহর পথে দান করে।
(জ) শেষরাতে তাহাজ্জুদ সালাতে আল্লাহর কাছে ইস্তেগফার করে।
আয়াতের আমল:
আখেরাতে মুক্তি এবং স্থায়ী ও উত্তম ভোগসামগ্রী লাভের জন্য আয়াতে বর্ণিত একজন মোত্তাক্বীর আটটি গুণ দিয়ে দৈনন্দিন জীবনকে সাজানো।