Skip to main content

সূরা আন নাবা এর পরিচয়:

By January 9, 2024March 20th, 2024দৈনিক তাফসীর1 min read

সূরা আন নাবা এর পরিচয়:

সূরার নাম: আরবী ভাষায় প্রচলিত একটি নিয়ম হলো: একটি বড় বিষয় বা জিনিসের নাম রাখা হয় তার মধ্যে অন্তর্ভূক্ত একটি ছোট অংশ দিয়ে। পবিত্র কোরআনের সূরার নামকরণের ক্ষেত্রেও তার বিপরীত হয়নি। এজন্য বিভিন্ন তাফসীর গ্রন্থ থেকে অত্র সূরার এমন পাঁচটি নাম পাওয়া যায়, যা সূরার মধ্যেই নিহিত রয়েছে। নামগুলো হলো:
(ক) ‘সূরা আম্মা’ সূরাটি অত্র শব্দ দিয়ে শুরু হওয়ার কারণে এ নামে নামকরণ করা হয়েছে।
(খ) ‘সূরা আন নাবা’, শব্দটি সূরার দ্বিতীয় নাম্বার আয়াতে উল্লেখিত হয়েছে।
(গ) ‘সূরা আম্মা ইয়াতাসাআলূন’, বাক্যটি সূরার প্রথম আয়াত।
(ঘ) ‘সূরা আল-মুՙসিরাত’, শব্দটি সূরার ১৪ নাম্বার আয়াতে বর্ণিত হয়েছে।
(ঙ) ‘সূরা তাসাউল’, শব্দটি সূরার প্রথম আয়াতে বর্ণিত হয়েছে। (রুহুল মায়ানী, আলূসী: ১৫/২০১, তাফসীর মাওজূয়ী, মোস্তফা মুসলিম: ১০/১) ।

আলোচ্যবিষয়: পুনরুত্থান দিবস ও তা সংগঠিত হওয়ার প্রমাণ।

সূরার ফযিলত:
(ক) কিয়ামুল লাইলে ‘সূরা আন নাবা’ তেলাওয়াত করা, রাসূলুল্লাহ (সা.) কিয়ামুল লাইলে এ সূরা পাঠ করতেন (মাওসূয়াত ফাযায়িল সূয়ার, তারহুনী: ২./১১০) । আব্দুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রা.) বলেন:
“أنَّ النبي – صلَّى الله عليه وسلم – كان يقرأ النَّظائرَ السُورتين في رَكْعةٍ، (الرحمن، والنجم) في ركعة، و (اقتربت، والحاقة) في ركعة، و (الطور، والذاريات) في ركعة، و (إذا وقَعَت، ونون) في ركعة، و (سأل سائل، والنازعات) في ركعة، و (وَيْلٌ للمطففين، وعبس) في ركعة، و (المدَّثر، والمزمِّل) في ركعة، و (هل أتى، ولا أقسمُ بيوم القيامة) في ركعة، و (عمَ يتساءلون، والمرسلات) في ركعة، و (الدخان، وإذا الشمسُ كورت) في ركعة” (سنن أبو داود: ১৩৯৬).
অর্থাৎ: “রাসূলুল্লাহ (সা.) এক রাকয়াতে সাদৃশ্যপূর্ণ দুইটি সূরা তেলাওয়াত করতেন। প্রথম রাকয়াতে সূরা রহমান ও নায্ম, পরের রাকয়াতে সূরা ক্বমার ও হাক্ক¦াহ, পরের রাকয়াতে সূরা ত‚র ও যারিয়াাত, পরের রাকয়াতে সূরা ওয়াক্বিয়া ও নূন, পরের রাকয়াতে সূরা মায়ারিজ ও নাাযিয়াাত, পরের রাকয়াতে সূরা মুতাফফিফীন ও আবাসা, পরের রাকায়াতে সূরা মুদ্দাস্সির ও মুয্যাম্মিল, পরের রাকয়াতে দাহ্র ও কিয়ামাহ, পরের রাকায়াতে সূরা নাবা ও মুরসালাত এবং শেষের রাকাতে সূরা দুখান ও তকভীর” (সুনান আবি দাউদ: ১৩৯৬, হাদীসটি সহীহ) ।
(খ) অত্র সূরাটি মুফাস্সালাত এর অন্তভ‚ক্ত, আর মুফাস্সালাত সূরাগুলোকে কোরআনের অন্তর বলা হয়। যেমন: ইবনু আব্বাস (রা.) বলেন:
(إِنَّ لِكُلِّ شَيْءٍ سَنَامًا، وَإِنَّ سَنَامَ الْقُرْآنِ سُورَةُ الْبَقَرَةِ، وَإِنَّ لِكُلِّ شَيْءٍ لُبَابًا، وَإِنَّ لُبَابَ الْقُرْآنِ الْمُفَصَّلُ) [سنن الدارمي: ৩৪২০].
অর্থাৎ: “প্রত্যেক জিনিসের মস্তিষ্ক আছে, কোরআনের মস্তিষ্ক হলো: সূরা বাকারা; এবং প্রত্যেক জিনিসের অন্তর আছে, আর কোরআনের অন্তর হলো: মুফাস্সাল সূরাগুলো”।
(সুনানে দারিমী, ৩৪২০) ।
আরো একটি হাদীসে এসেছে, যেখানে বলা হয়েছে মুফাস্সালাত সূরাগুলো ইতিপূর্বে কোন নবী-রাসূলকে প্রদান করা হয়নি। যেমন: রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন:
(لَقَدْ أُعْطِيتُ السَّبْعَ الطِّوَالَ مَكَانَ التَّوْرَاةَ، وَالْمَثَانِي مَكَانَ الْإِنْجِيلِ، وَفُضِّلْتُ بِالْمُفَصَّلِ) [مسند الشامين: ২৭৩৪].
অর্থাৎ: “আমাকে তাওরাত এর স্থলাভিষিক্ত সাতটি লম্বা সূরা, ইনজীল এর স্থলাভিষিক্ত মাসানী সূরাগুলো দেওয়া হয়েছে এবং আমাকে অতিরিক্ত প্রদান করা হয়েছে মুফাস্সাল সূরাগুলো, যা পূর্বের কোন নবী-রাসূলকে দেওয়া হয়নি”। (মুসনাদে শামী, ২৭৩৪) ।

হাদীসে মুফাস্সালাত সূরা দ্বারা উদ্দেশ্য হলো: সূরা ক্বফ থেকে সূরা নাস পর্যন্ত সূরাগুলো।

মুসহাফে সূরাটির অবস্থান: ৭৮তম সূরা।

অবতীর্ণের দৃষ্টিতে সূরাটির অবস্থান: ৭৯তম সূরা, যা ‘সূরা মায়ারেয’ এর পরে এবং ‘সূরা নাযিয়াত’ এর পূর্বে অবতীর্ণ হয়েছে।

অবতীর্ণের স্থান: সকল তাফসীরকারক একমত যে, সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে, সতরাং তা সূরা মাক্কিয়্যাহ। (বিতাকাত আল-তারীফ, ২৭৪) ।

আয়াত সংখ্যা: ৪০টি।

অবতীর্ণের প্রেক্ষাপট: এ সূরাটির একটি অবতীর্ণের প্রেক্ষাপট পাওয়া যায়।

Leave a Reply

error: Content is protected !!